দলিল সম্পাদনের ৪০ বছর পর দলিল প্রকাশ্যে আসে জাল জালিয়াতির বিষয়টি
নোমান সিকদার, চরফ্যাসন ॥ চরফ্যাসনের দক্ষিন আইচায় দলিল জালিয়াতির মাধ্যমে নাবালগের জমি আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ১১ বছরের শিশুকে প্রাপ্ত বয়স্ক দেখিয়ে নকল দাতা দাড় করে দলিল সম্পাদনের ৪০ বছর পর দলিল প্রকাশ্যে আসলে জাল জালিয়াতির বিষয়টি আলোচনায় এসছে। এখন জমির দখল প্রশ্নে দুইপক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয়ায় শান্তিভঙ্গের আশংকা বাড়ছে। জানা গেছে, চর আইচা মৌজার ২২৫ ও ১০৯ খতিয়ানের ৭ একর ৩৭ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন আলী একাব্বর ফরাজি। ১৯৭০ সনের ১২ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় গোর্কির থাবায় মারা যান আলী একাব্বর ফরাজি। মৃত্যুকালে তিনি ৪ স্ত্রী, ৪ মেয়ে এবং ১০ ছেলে রেখে যান। মৃত বাবা আলী একাব্বর ফাজির উত্তরাধীকার হিসেবে পুত্র হালিম ফরাজি ২২৫ ও ১০৯ খতিয়ানের ৫২ শতাংশ জমির মালিক হন। পুত্র হালিম ফরাজি অভিযোগ করেন, বাবা একাব্বর ফারাজীর মৃত্যুর পর সৎমা ও ভাইদের প্রভাবে তিনি অসহায় হয়ে পড়েন। শিশুকালে জীবিকার তাগিদে ঢাকা চলে যান। ঢাকা থাকাকালীন সময়ে সৎ ভাইরা নিজেরই ওই জমি চাষবাদ করতেন। লগনি খরচ বাবদ তাকে বছরে সামান্য কিছু টাকা দিতেন। ৪০ বছর পর ঢাকা থেকে গ্রামে ফিরে জমি চাষের উদ্যোগ নেন। কিন্ত চরআইচা মৌজার ২২৫ ও ১০৯ খতিয়ানের ৫২ শতাংশ জমি চাষে বাধা দেন মাও. আব্দুল গনির ওয়ারিশ শহীদ আবু জাহের ও শাহাবুদ্দিনগংরা। আব্দুল গনির ওয়ারিশদের দাবী ১৯৮১ সনের ৩০ সেপ্টেম্বর চরফ্যাসন সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের ৫৯৮৯ ও ৫৯৯০ নম্বর দলিল মূলে তারা ওই জমির মালিক বটে। এই দু’টি দলিলের উৎস খুজঁতে গিয়ে দলিল জালিয়াতির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। হালিম ফরাজী অভিযোগ করেন, ১৯৭০ সনের ১ জানুয়ারী তার জম্ম। জম্মের বছরের ১২ নভেম্বর তার বাবা মারা যান। ১৯৮১ সনে তার বয়স ছিল মাত্র ১১ বছর। ওই ১১ বছর বয়সে মাও. আবদুল গনি ভুয়াদাতা দাড় করে চরফ্যাসন সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের ৫৯৮৯ ও ৫৯৯০ দলিল সৃজনের মাধ্যমে ২২৫ ও ১০৯ খতিয়ানের ৫২ শতাংশ জমি রেজিষ্ট্রি করেন। দীর্ঘদিন এই দলিল গোপন রাখা হয়। সম্প্রতি আবদুল গনির ওয়ারিশরা মালিকানার দাবীসহ দলিলটি প্রকাশ করলে জালিয়াতির বিষয়টি সামনে আসে। অভিযুক্ত মাও. আব্দুল গনির ওয়ারিশ শহীদ আবু জাহের ও শাহাবুদ্দিন জালজালিয়াতির বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, তারা বাবা হালিম ফরাজীর নিকট থেকে ওই জমি ১৯৮১ সনে খরিদ করেছেন। জালিয়াতির বিষয়টি সঠিক নয়। ১৯৮১ সনে হালিম ফরাজী অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছিলেন জমি কিভাবে বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের কোন জবাব দিতে পারেনি তারা। দক্ষিণ আইচা থানার ওসি মো. হারুন অর রশিদ জানান, এঘটনায় কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
Leave a Reply